কম্পিউটার রক্ষণাবেক্ষণ


দিন দিন এগিয়ে যাচ্ছে আমাদের এই বিশ্ব। আর এই এগিয়ে যাওয়ার পথে যে জিনিসটি আমাদের সবচেয়ে বেশি সাহায্য করছে তা হল কম্পিউটার।বৃক্ষের যেমন নিয়মিত পরিচর্যা না করলে ভাল ফল আশা করা যায় না। কম্পিউটারকে যদি পরিচর্যা না করেন, এটির প্রতি যদি যত্নবান না হন, তবে এর থেকেও ভাল ফলাফল আপনি আশা করতে পারবেন না। কম্পিউটারের মাধ্যমে অধিক পরিমাণ সার্ভিস বা সেবা পাওয়ার জন্য অবশ্যই এটির যত্ন নিতে হবে।

“মূলত কমিপউটারের বিভিন্ন অংশের সংযোগ দেওয়া, কম্পিউটারের সঠিক যত্ন নেওয়া, নির্দিষ্ট সময় পর পর বিভিন্ন যন্ত্রাংশ পরীক্ষা-নিরীক্ষার মাধ্যমে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা, কোন যন্ত্র ঠিক মত কাজ না করলে তার মেরামত, পরিবর্তন ইত্যাদিকে সামগ্রিক ভাবে কম্পিউটারের রক্ষণাবেক্ষণ বলা হয়।”


কম্পিউটার রক্ষণাবেক্ষণের প্রয়োজনীয়তা:


মানুষ সৃষ্টির সেরা জীব। এখন এই মানুষের শরীরের বিভিন্ন অংশের যদি কোন মানুষ যত্ন না নেয়, তাহলে কি তার থেকে ভাল ফল পাওয়া যাবে। যেই অংশের যত্নে আপনি ঘাটতি দেখাবেন সেই অংশটিই ক্ষতিগ্রস্থ হবে। আর চিন্তা করুণ কম্পিউটার হচ্ছে সকল ইলেক্ট্রনিক যন্ত্রাংশের সেরা। সুতরাং এর থেকে ভাল ফল পেতে হলে আপনাকে অবশ্যই এর পরিচর্যা করতে হবে। বাইরের বিভিন্ন নিয়ামক যেমন:আদ্রতা,তাপমাত্রা,বিদ্যুত ক্ষেত্র, চুম্বক ক্ষেত্র, ধুলিকণা, ধোঁয়া, পানি ইত্যাদির প্রভাব থেকে কম্পিউটারকে রক্ষা করতে হবে।

কম্পিউটার রক্ষণাবেক্ষনে আমরা যে সমস্ত অবহেলা করি:


১. কমিপউটারটা এমন এক স্থানে রাখি যেখানে সরাসরি ধুলাবালি প্রবেশ করে।
২. বিদ্যুতিক সংযোগ ঠিক মত দেই না।
৩. ইউ.পি.এস থাকলে এর সঠিক ব্যবহার করি না।
৪. ব্যবহারের পর কম্পিউটার ডেকে রাখি না।
৫. অনেকে আবার একেবারে বদ্ধ স্থানে কম্পিউটার রাখি,যার ফলে সি.পি.উর হাওয়া বের হওয়ার সুযোগ কম থাকে।
৬.কি-বোর্ড ও মাউসের যত্ন নিই না।
৭. ভাইরাস সম্পর্কে সচেতন থাকি না।
৮. কম্পিউটারের ভিতরের ফাইল/ফোল্ডার গুলো এলোমেলো ভাবে রাখি।

প্রতিরোধমূল মূলক রক্ষণাবেক্ষণ:

এ ব্যাপারে ধারাবাহিক পোস্ট দেয়া হবে। এখানে বেসিক কিছু জিনিস আলোচনা করা হল:

প্রতিদিন যা করা দরকার:

১. প্রতিদিন ধুলোবালি মুছতে হবে।
২. ব্যবহারের সময় বিদ্যুতিক সংযোগ এর ব্যাপারে সচেতন থাকতে হবে।
৩. কম্পিউটার টেবিলের আশেপাশ পরিষ্কার রাখতে হবে।
৪. ব্যবহারের পর কম্পিউটার ডেকে রাখতে হবে।
৫. অতিরিক্ত সময় কম্পিউটার চালালো যাবে না।
৬. অনেক সময় আমরা করি কি,কম্পিউটার বন্ধ করে আবার হুট করেই ১০/২০ মিনিট পর এসে কম্পিউটার চালাই।এতে কম্পিউটারের ক্ষতি হয়।একান্ত প্রয়োজন না হলে এমনটা করা যাবে না।
৭. আদ্রতা সম্পর্কে সচেতন থাকা।

প্রতি সপ্তাহে যা একবার করা দরকার:

১. কম্পিউটারের আশেপাশ ভালমত পরিষ্কার রাখা।
২. এন্টিস্ট্যাটিক এবং ধূলা শোষক কাপড় দিয়ে কম্পিউটারের ডেস্ক,শেলফ মুছা।
৩. কম্পিউটার টেবিলের উপর থাকা কাজগপত্র,পত্রিকা ইত্যাদি গুছিয়ে রাখা।
৪. ডিস্ক ড্রাইভের রিড হেড পরিষ্কার করা।
৫. মনিটরের ডিসপ্লে পরিষ্কার রাখা।
৬. স্ক্যানডিস্ক প্রোগ্রাম চালনা করা।
৭. ভাইরাস স্ক্যান করা।

প্রতিমাসে যা অত্যন্ত একবার করা দরকার:

১. ডিফ্র্যাগমেন্টেশন ও স্ক্যান করা।
২. ড্রাইভের হেড পরিষ্কার রাখা।
৩. কম্পিউটার খুলে ভিতরের অংশ পরিষ্কার করা।তবে এ ক্ষেত্রে সতর্ক থাকতে হবে।না জেনে কোন যন্ত্রে হাত না দেওয়াই উত্তম।
সিডি ড্রাইভের গতি পরীক্ষা করে কম বেশি হলে তা নিয়ন্ত্রণ করা।
২. বিভিন্ন সংযোগ ও সংযোগ পিন পরিষ্কার করা।
৩. প্রয়োজনীয় সফট্ওয়্যার আপডেট দেওয়া।
কম্পিউটারের আশেপাশে কোন ধাতব পদার্থ রাখা যাবে না এবং ইলেকট্রিক শক থেকে রক্ষা পাবার জন্য অবশ্যই কম্পিউটারের বিদ্যুত সংযোগ ব্যবস্থায় আর্থিং থাকা উচিত।

কোন মন্তব্য নেই: